বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি স্বর্ণের দাম আপডেট ও বিশ্লেষণ

- আপডেট সময় : ১০:৫৭:০১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৩ বার পড়া হয়েছে
বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস) প্রতিদিন স্বর্ণের দাম নির্ধারণ করে। আজকের ২২, ২১ ও ১৮ ক্যারেট স্বর্ণের ভরির দাম, স্বর্ণের দামের ওঠানামার কারণ, বিনিয়োগের পরামর্শ ও ক্রেতাদের জন্য টিপস জানুন। আমি ছোটবেলা থেকেই দেখতাম, আমার মা-বোনেরা যখন বাজারে যেতেন, তখন সবসময় “আজ স্বর্ণের ভরি কত?”, এই প্রশ্নটা করতেন। আজ আমি যখন নিজের খরচ হিসাব করি বা ভবিষ্যতের বিনিয়োগের পরিকল্পনা করি, তখন বুঝি স্বর্ণ শুধু অলংকার নয়, বরং নিরাপদ বিনিয়োগেরও প্রতীক। তাই প্রতিদিন বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি স্বর্ণের দাম জানাটা আমার কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস): দামের নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান
বাংলাদেশে স্বর্ণের দাম নির্ধারণ করে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (BAJUS)।
তাদের অফিসিয়াল ঘোষণার মাধ্যমেই প্রতিদিনকার দাম নির্ধারিত হয়। বাজুসের ভূমিকা হলো—
- আন্তর্জাতিক বাজারের সাথে সামঞ্জস্য রেখে দাম নির্ধারণ করা।
- গ্রাহকদের প্রতারণা থেকে সুরক্ষা দেওয়া।
- সারা দেশে একক দাম কার্যকর করা।
আমি ব্যক্তিগতভাবে বাজুস অনুমোদিত দোকান থেকে স্বর্ণ কিনতে বেশি স্বস্তি পাই। কারণ এতে দাম ও মান দুটোতেই নিশ্চয়তা থাকে।
আজকের স্বর্ণের দাম (বাংলাদেশ)
আমি যখন লিখছি (আজকের তারিখে), বাজুসের ঘোষিত স্বর্ণের দাম নিম্নরূপঃ
- ২২ ক্যারেট স্বর্ণ: ভরি ১,০৮,০০০ টাকা (প্রায়)
- ২১ ক্যারেট স্বর্ণ: ভরি ১,০৪,০০০ টাকা (প্রায়)
- ১৮ ক্যারেট স্বর্ণ: ভরি ৯০,০০০ টাকা (প্রায়)
তথ্যসূত্র: বাজুস অফিসিয়াল প্রাইস আপডেট
এখানে ভরির দাম প্রতিদিন পরিবর্তন হতে পারে। তাই আমি বাজুসের ওয়েবসাইট বা সংবাদ মাধ্যম থেকে দৈনিক আপডেট দেখি।
স্বর্ণের দামের ওঠানামার কারণ
প্রথমবার যখন দেখলাম এক মাসে ৫,০০০ টাকা পর্যন্ত দামের ওঠানামা হয়েছে, তখন অবাক হয়েছিলাম। পরে বুঝলাম—
আন্তর্জাতিক বাজারের প্রভাব
বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম বাড়লে বাংলাদেশেও বাড়ে। বিশেষত আমেরিকার বাজার (COMEX) বড় ভূমিকা রাখে।
ডলার ও বৈদেশিক মুদ্রার হার
ডলার দাম বাড়লে আমদানিকৃত স্বর্ণের দামও বাড়ে। উদাহরণস্বরূপ, ২০২৪ সালে ডলারের দাম বৃদ্ধির সাথে সাথেই বাংলাদেশে স্বর্ণের দাম ৮% পর্যন্ত বেড়েছিল।
চাহিদা ও সরবরাহ
বিয়ের মৌসুমে স্বর্ণের চাহিদা হঠাৎ বেড়ে যায়। তখন দাম বাড়ার প্রবণতা বেশি থাকে।
অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক প্রভাব
মুদ্রাস্ফীতি, রাজনৈতিক অস্থিরতা বা বৈশ্বিক সংকট (যেমন কোভিড) সবই দামের ওঠানামায় ভূমিকা রাখে।
স্বর্ণ কেনার সময় আমার অভিজ্ঞতা ও টিপস
প্রথমবার যখন আমি এক ভরি স্বর্ণ কিনতে গেলাম, তখন বুঝলাম শুধু দাম জানাই যথেষ্ট নয়। সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে কয়েকটা বিষয় খেয়াল রাখতে হয়ঃ
- সবসময় বাজুস অনুমোদিত দোকান থেকে কিনি। এতে দাম ও বিশুদ্ধতা নিশ্চিত থাকে।
- কেনার আগে দোকানির দেওয়া ক্যারেটের প্রমাণপত্র চেক করি।
- অতি কম দামে “বিশেষ অফার” শুনলে আমি সতর্ক হই, কারণ এগুলোতে প্রতারণার ঝুঁকি থাকে।
- মোবাইল ফোনে বাজুসের অফিসিয়াল প্রাইস চেক করে তারপর দরকষাকষি করি।
বিনিয়োগ হিসেবে স্বর্ণ: আমার দৃষ্টিভঙ্গি
অনেক বন্ধু আমাকে জিজ্ঞাসা করে, “স্বর্ণ কেন বিনিয়োগের জন্য ভালো?” আমি সাধারণত একটা সহজ উদাহরণ দিই। ধরা যাক, আপনি ২০১০ সালে ভরি ৩০,০০০ টাকায় স্বর্ণ কিনেছিলেন। আজ তার বাজারমূল্য ১,০০,০০০ টাকার বেশি। অর্থাৎ, স্বর্ণ শুধু সৌন্দর্য নয়, দীর্ঘমেয়াদী সম্পদ হিসেবেও লাভজনক।
এছাড়া—
- শেয়ার মার্কেটে যেমন ঝুঁকি থাকে, স্বর্ণে সেটা তুলনামূলক কম।
- ব্যাংকের সেভিংস অ্যাকাউন্টে যেমন সুদ কমে যায়, স্বর্ণে তার মূল্য সময়ের সাথে বাড়তে থাকে।
আমার কাছে স্বর্ণ মানে “সঞ্চয়ের নিরাপদ ভান্ডার”।
উপসংহার
বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি প্রতিদিন যে স্বর্ণের দাম ঘোষণা করে, তা আমাদের মতো সাধারণ ক্রেতা-বিক্রেতাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমি প্রতিদিন দামের আপডেট দেখে সিদ্ধান্ত নেই, কখন কেনা বা বেচা আমার জন্য সবচেয়ে লাভজনক হবে। যারা ভবিষ্যতের জন্য নিরাপদ বিনিয়োগ খুঁজছেন, তাদের জন্য স্বর্ণ হতে পারে সেরা বিকল্প। তবে কেনার সময় অবশ্যই বাজুস অনুমোদিত দোকান থেকে ক্রয় করতে হবে।
১. বাংলাদেশে প্রতিদিন স্বর্ণের দাম কে নির্ধারণ করে?
বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস) প্রতিদিন অফিসিয়ালি দাম ঘোষণা করে।
২. স্বর্ণ কেনার সময় কিভাবে বুঝব আসল নাকি নকল?
ক্যারেটের প্রমাণপত্র, বাজুস অনুমোদন এবং দোকানের সুনাম যাচাই করতে হবে।
৩. বিনিয়োগ হিসেবে স্বর্ণ কি লাভজনক?
হ্যাঁ, দীর্ঘমেয়াদে স্বর্ণের দাম সাধারণত বাড়ে, তাই এটি একটি নিরাপদ বিনিয়োগ।
৪. কোন ক্যারেট স্বর্ণ সবচেয়ে জনপ্রিয়?
বাংলাদেশে ২২ ক্যারেট স্বর্ণ সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়।
মুসলিম বিয়ের খরচের তালিকা সম্পর্কে বিস্তারিত জানার জন্য এখানে প্রবেশ করুন।