বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন এর ভূমিকা ও দায়িত্ব

- আপডেট সময় : ০৯:৩১:১২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৭ অগাস্ট ২০২৫ ৩১ বার পড়া হয়েছে
বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন আমাদের দেশের বিদ্যুৎ, গ্যাস ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতকে নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালনার মূল প্রতিষ্ঠান। আমি যখন প্রথমবার কমিশনের কাজ সম্পর্কে জানতে শুরু করি, তখন বুঝতে পারি, এটি শুধু দাম নির্ধারণ করে না, বরং দেশের জ্বালানি নিরাপত্তা ও অর্থনীতির ভারসাম্য নিশ্চিত করতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন কী?
বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (সংক্ষেপে BERC) হলো একটি স্বতন্ত্র সংস্থা। এটি প্রতিষ্ঠিত হয় ২০০৩ সালে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন আইন, ২০০৩ এর আওতায়। এটি বিদ্যুৎ, প্রাকৃতিক গ্যাস, নবায়নযোগ্য শক্তি ও জ্বালানি খাতের কার্যক্রমকে নীতিগতভাবে তদারকি করে। অর্থাৎ, এটি এক প্রকার “রেফারি” যিনি বাজারে খেলোয়াড়দের (কোম্পানি, গ্রাহক ও সরকার) মধ্যে ভারসাম্য তৈরি করে দেন।
কমিশনের মূল দায়িত্ব ও ভূমিকা
আমি যদি সহজ করে বলি, কমিশনের দায়িত্ব হলো—
- বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম ন্যায্যভাবে নির্ধারণ করা।
- ভোক্তার স্বার্থ সুরক্ষা করা।
- নতুন বিনিয়োগকে উৎসাহিত করা।
- নবায়নযোগ্য শক্তিকে গুরুত্ব দেওয়া।
উদাহরণস্বরূপ, আপনি যদি বাসায় ইলেকট্রিক ফ্যান চালান, সেই বিদ্যুতের দাম কত হবে তা নির্ধারণের দায়িত্ব কমিশনের। আবার যে কোম্পানি গ্যাস সরবরাহ করছে, তাদের যেন অযথা দাম বাড়াতে না পারে সেটাও নিশ্চিত করে এই সংস্থা।
কেন এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন প্রয়োজন?
আমরা সবাই জানি, বিদ্যুৎ ও গ্যাস মানুষের দৈনন্দিন জীবনের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত। যদি এর দাম হঠাৎ দ্বিগুণ হয়ে যায়, তাহলে শুধু বাসার বিল নয়, সবকিছুর উপর প্রভাব পড়ে, খাবার থেকে শুরু করে পরিবহন পর্যন্ত।
তাই কমিশন প্রয়োজন:
- বাজারে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে
- দুর্নীতি ও একচেটিয়া ব্যবসা রোধ করতে
- ন্যায্য মূল্য বজায় রাখতে
- দীর্ঘমেয়াদে টেকসই জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে
বাংলাদেশে বিদ্যুৎ ও গ্যাস খাতে কমিশনের প্রভাব
আমরা সবাই টের পাই, যখন কমিশন বিদ্যুতের ট্যারিফ পরিবর্তন করে। ২০২৩ সালে কমিশন বিদ্যুতের খুচরা দাম প্রায় ৫% বৃদ্ধি করে (সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো), যা সরাসরি ভোক্তার উপর প্রভাব ফেলে।
এছাড়া:
- গ্যাস সরবরাহে নীতিমালা নির্ধারণ
- নবায়নযোগ্য শক্তি যেমন সোলার, বায়ু ও বায়োগ্যাসকে উৎসাহ দেওয়া
- স্মার্ট গ্রিড ও আধুনিকায়নের পরিকল্পনা
চ্যালেঞ্জ ও সমাধান
আমি মনে করি কমিশনের সামনে তিনটি বড় চ্যালেঞ্জ রয়েছে:
- দুর্নীতি ও অস্বচ্ছতা – অনেক সময় দাম নির্ধারণে বিতর্ক সৃষ্টি হয়।
- আমদানি নির্ভরতা – আমাদের গ্যাস ও জ্বালানির একটি বড় অংশ আমদানি করতে হয়।
- নবায়নযোগ্য শক্তির ধীরগতি – এখনও সৌরবিদ্যুৎ পুরো দেশকে কাভার করতে পারেনি।
সমাধান হিসেবে:
- দুর্নীতি রোধে ডিজিটাল ট্রান্সপারেন্সি
- বিকল্প শক্তির প্রসার
- তরুণ প্রজন্মকে সাশ্রয়ী প্রযুক্তি ব্যবহার শেখানো
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ও সম্ভাবনা
কমিশন আগামী দিনে স্মার্ট গ্রিড, সৌরবিদ্যুৎ, উইন্ড পাওয়ার এবং বায়োগ্যাস এর দিকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। আমি বিশ্বাস করি, যদি এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হয়, তাহলে বাংলাদেশে বিদ্যুতের উপর চাপ কমবে এবং জ্বালানি খাত আরও টেকসই হবে।
আমার শেষ কথা
আমরা যারা ১৮-৩০ বছরের তরুণ প্রজন্ম, আমাদের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে টেকসই জ্বালানি ব্যবস্থার উপর। বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন শুধু দাম নিয়ন্ত্রণ করে না, এটি আমাদের অর্থনীতি, পরিবেশ এবং দৈনন্দিন জীবনের সঙ্গে সরাসরি জড়িত। তাই আমি মনে করি, আমাদের সবাইকে এই সংস্থার ভূমিকা ও কার্যক্রম সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে।
বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন কবে প্রতিষ্ঠিত হয়?
২০০৩ সালে, বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন আইন অনুযায়ী।
কমিশনের প্রধান কাজ কী?
বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম নির্ধারণ, ভোক্তার স্বার্থ সুরক্ষা এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতকে উৎসাহ দেওয়া।
কমিশনের সিদ্ধান্তে কাদের প্রভাব পড়ে?
সাধারণ ভোক্তা, বিদ্যুৎ কোম্পানি, গ্যাস সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান এবং দেশের অর্থনীতির উপর সরাসরি প্রভাব পড়ে।
ভবিষ্যতে কমিশনের পরিকল্পনা কী?
সৌরশক্তি, উইন্ড পাওয়ার, স্মার্ট গ্রিড এবং আধুনিক জ্বালানি প্রযুক্তিতে গুরুত্ব দেওয়া।
সোনার দাম কত আজকে 2025 বাংলাদেশ সম্পর্কে বিস্তারিত জানার জন্য এখানে প্রবেশ করুন।