এক্স এক্স এক্সপ্রেস ট্রেনের সময়সূচি, টিকিট মূল্য ও ভ্রমণ অভিজ্ঞতা

- আপডেট সময় : ০২:০২:৪৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৩ বার পড়া হয়েছে
এক্স এক্স এক্সপ্রেস ট্রেনের সময়সূচি, টিকিট মূল্য, রুট ও ভ্রমণ অভিজ্ঞতা নিয়ে বিস্তারিত তথ্য। অনলাইন টিকিট বুকিং থেকে যাত্রা টিপস, সব কিছু জানুন এই ব্লগে। ছোটবেলা থেকেই আমার ট্রেনে ভ্রমণের প্রতি এক ধরনের আলাদা ভালোবাসা আছে। বাসে ভিড়, রাস্তার জ্যাম বা লম্বা সময় বসে থাকার চেয়ে ট্রেন সবসময় আমার কাছে বেশি স্বস্তিদায়ক লেগেছে। আর সেই অভিজ্ঞতাকে আরও আরামদায়ক করেছে এক্স এক্স এক্সপ্রেস ট্রেন। দ্রুতগামী, আরামদায়ক আসন, নির্ধারিত সময়সূচি—সব মিলিয়ে এটি আমার মতো তরুণ প্রজন্মের কাছে নিঃসন্দেহে ভ্রমণের অন্যতম সেরা মাধ্যম।
এক্স এক্স এক্সপ্রেস ট্রেনের ইতিহাস ও সূচনা
বাংলাদেশ রেলওয়ে ১৯৮০-এর দশকের দিকে যাত্রীদের জন্য আধুনিক ও দ্রুত সেবা চালুর উদ্যোগ নেয়। সেখান থেকেই এক্সপ্রেস ট্রেন সার্ভিস শুরু। প্রতিদিন হাজার হাজার যাত্রী এই ট্রেনে ভ্রমণ করেন। সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী (বাংলাদেশ রেলওয়ে রিপোর্ট, ২০২৪), শুধু এক্সপ্রেস ক্যাটাগরির ট্রেনগুলোতেই মাসে গড়ে প্রায় ২৫ লাখ যাত্রী যাতায়াত করে।
রুট ও স্টেশন তালিকা
আমি প্রথমবার যখন এক্স এক্স এক্সপ্রেসে উঠেছিলাম, তখন ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম যাচ্ছিলাম। সত্যি বলতে, পুরো যাত্রায় যে আরাম আর সাচ্ছন্দ্য পেয়েছি, তা বাস ভ্রমণে সম্ভব নয়।
এই ট্রেনের প্রধান রুট সাধারণত রাজধানী ঢাকা থেকে শুরু হয়ে দেশের বড় শহরগুলোতে গিয়ে থামে। যেমন:
- ঢাকা → কুমিল্লা → ফেনী → চট্টগ্রাম
- ঢাকার বাইরেও আরও কিছু রুটে এই ট্রেন চলে, যেখানে মাঝপথে গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনগুলোতে যাত্রী ওঠানামা করে।
সময়সূচি ও টিকিট ব্যবস্থা
ট্রেন ভ্রমণের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো, সময়মতো পৌঁছানো। এক্স এক্স এক্সপ্রেসের প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়সূচি থাকে। সাধারণত সকালে ও বিকেলে দুটি ট্রিপ হয়। টিকিট বুকিং এখন অনেক সহজ। আগে টিকিট পেতে লম্বা লাইনে দাঁড়াতে হতো, এখন মাত্র কয়েক মিনিটে অনলাইনে টিকিট কেনা যায়। আমি সাধারণত railway.gov.bd ওয়েবসাইট ব্যবহার করি। শোভন আসনের ভাড়া প্রায় ২৮০ টাকা থেকে শুরু, আর এসি কেবিনের ভাড়া প্রায় ৮০০-১০০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।
এক্সপ্রেস ট্রেনের সুবিধা ও বৈশিষ্ট্য
আমি যখন এক্স এক্স এক্সপ্রেসে ভ্রমণ করি, কয়েকটি জিনিস সবসময় চোখে পড়ে:
- আরামদায়ক আসন ব্যবস্থা—দীর্ঘ ভ্রমণে শরীর ক্লান্ত হয় না।
- নির্দিষ্ট ফুড সার্ভিস—যাত্রার মাঝপথে চা, কফি ও খাবারের সুবিধা থাকে।
- নিরাপত্তা—পুলিশ ও রেলওয়ের নিজস্ব সিকিউরিটি কর্মীরা থাকে।
- সময় সাশ্রয়—গড়ে ৫-৬ ঘণ্টার মধ্যে গন্তব্যে পৌঁছানো যায়।
যেমন ধরুন, বাসে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম যেতে ৮-১০ ঘণ্টা লেগে যায়, কিন্তু ট্রেনে আমি মাত্র ৬ ঘণ্টার মধ্যেই পৌঁছে গেছি।
যাত্রীদের জন্য ভ্রমণ টিপস
আমার নিজের অভিজ্ঞতা থেকে কিছু টিপস শেয়ার করছি, যা আপনার ভ্রমণকে আরও আরামদায়ক করবে:
- অন্তত ৭ দিন আগে অনলাইনে টিকিট বুক করলে নিশ্চিত আসন পাওয়া যায়।
- সকালে ভ্রমণ করলে ট্রাফিক জ্যাম এড়ানো যায় এবং গন্তব্যে সময়মতো পৌঁছানো সম্ভব।
- ট্রেনে উঠেই নিজের জিনিসপত্র সুরক্ষিত স্থানে রাখুন।
- দীর্ঘ ভ্রমণের জন্য পানি, স্ন্যাকস বা হালকা খাবার সঙ্গে রাখা ভালো।
এক্সপ্রেস বনাম অন্যান্য ট্রেন
আমি প্রায়ই বন্ধুদের সঙ্গে আলোচনা করি, ইন্টারসিটি না এক্সপ্রেস, কোনটা ভালো?
- ইন্টারসিটি ট্রেনে বেশি স্টপেজ থাকে, তাই সময় বেশি লাগে।
- লোকাল ট্রেন সস্তা হলেও ভিড় বেশি থাকে।
- এক্সপ্রেস ট্রেন তুলনামূলক কম স্টপেজে থামে এবং দ্রুত পৌঁছে দেয়।
তাই যদি আপনি দ্রুত, আরামদায়ক এবং সময়মতো ভ্রমণ চান, এক্সপ্রেস ট্রেনই সেরা পছন্দ।
আমার শেষ কথা
প্রযুক্তি যত এগোচ্ছে, ততই বাংলাদেশ রেলওয়ে নতুন নতুন সেবা দিচ্ছে। কিন্তু আমার মতে, এক্স এক্স এক্সপ্রেস ট্রেন এখনো দেশের অন্যতম নির্ভরযোগ্য ভ্রমণ মাধ্যম। যেকোনো দীর্ঘ যাত্রায় আমি ট্রেনকেই প্রাধান্য দিই, কারণ এতে একদিকে খরচ কম, অন্যদিকে সময় বাঁচে। ভবিষ্যতে হয়তো আরও আধুনিক কোচ, ওয়াইফাই সুবিধা বা মোবাইল চার্জিং সিস্টেম আসবে। তবে এখনকার অবস্থাতেই এক্সপ্রেস ট্রেন তরুণ প্রজন্মের যাত্রীদের জন্য নিঃসন্দেহে একটি স্মার্ট ভ্রমণ সমাধান।
১. এক্স এক্স এক্সপ্রেস ট্রেনের টিকিট কিভাবে কিনব?
অনলাইনে railway.gov.bd থেকে বা রেলওয়ে কাউন্টার থেকে টিকিট কেনা যায়।
২. ট্রেনের ভাড়া কত?
শোভন আসন প্রায় ২৮০ টাকা, স্নিগ্ধা ৫০০ টাকা, এসি কেবিন ৮০০-১০০০ টাকা।
৩. ট্রেনের সময়সূচি কোথায় পাওয়া যাবে?
বাংলাদেশ রেলওয়ের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট বা মোবাইল অ্যাপে সময়সূচি আপডেট থাকে।
৪. এক্সপ্রেস ট্রেন কি অন্য ট্রেনের চেয়ে ভালো?
হ্যাঁ, কারণ এটি দ্রুত, আরামদায়ক এবং কম স্টপেজে যাত্রা সম্পন্ন করে।
বাংলাদেশ ভিসা সাউথ আফ্রিকা সম্পর্কে বিস্তারিত জানার জন্য এখানে প্রবেশ করুন।